ই-বর্জ্য পরিবেশদূষণের ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষাক্ত এই বর্জ্য পরিবেশের পাশাপাশি মানব স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। 'ই-ওয়েস্ট মনিটর রিপোর্ট ২০২৪' অনুসারে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ই-বর্জ্য উৎপাদক দেশ।

দেশে আইটি, মিডিয়া ও টেলিকমিউনিকেশন খাতের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজারও দ্রুত বাড়ছে। তবে এসব পণ্য থেকে উৎপন্ন ভারী ধাতু ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশে ছড়িয়ে বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-বর্জ্যের কারণে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়বিক সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি, শিশুমৃত্যু, এবং জন্মগত ত্রুটির মতো নানা স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে, এটি বায়ুদূষণ, পানিদূষণ এবং ভূমিদূষণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণীকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

সরকার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিধিমালা তৈরি করছে এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি গাইডলাইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 'ই-বর্জ্য বিধিমালা ২০২১' কার্যকর করার মাধ্যমে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার মধ্যে মোবাইল সেট থেকে আসে সাড়ে ১০ লাখ টন বর্জ্য। তবে দেশে রিসাইক্লিং কারখানা সীমিত হওয়ায় ই-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে কার্যকর ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি।

ই-বর্জ্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা না হলে, এটি মানুষের শারীরিক ও মান্সিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। তাই ই-বর্জ্য পুনঃব্যবহার এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন, যা দেশের ডিজিটালাইজেশন এবং পরিবেশের উন্নয়নে সহায়ক হবে।