আল্লাহর নাম ও গুনাবলী যা অস্বীকার করা কুফরি
আল্লাহর নাম ও গুণাবলি, যা কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত, তা অস্বীকার করা কুফরি।
আল্লাহ তাআলার নাম ও গুণাবলি, যা কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত, সেগুলোর প্রতি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের নির্ভেজাল বিশ্বাস রয়েছে। তারা কোনো ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ ছাড়া এ গুণাবলির প্রতি ঈমান স্থাপন করে এবং মুতাজিলাদের মতো মানবীয় গুণের সঙ্গে এগুলোর তুলনা বা ব্যাখ্যা করে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে:
‘কোনো কিছুই তার সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’
(সুরা: আশ-শুরা, আয়াত: ১১)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ তাআলা নিজেকে যে সুউচ্চ গুণে গুণান্বিত করেছেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত তা অস্বীকার করে না এবং ভুল ব্যাখ্যাও দেয় না।
আল্লাহর গুণাবলির প্রতি ঈমান স্থাপনের ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতি হলো:
1. কোনো সিফাতের অর্থ পরিবর্তন করা যাবে না।
2. সেগুলোকে অস্বীকার বা বাতিল করা যাবে না।
3. পদ্ধতি বা ধরন নির্ধারণ করা যাবে না।
4. কোনো উদাহরণ, উপমা বা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাবে না।
এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, আল্লাহর গুণাবলি ও সিফাতগুলোর প্রতি পূর্ণ ঈমান স্থাপন করা আবশ্যক। এর জন্য আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রয়োজন, যেন তার যথার্থ অর্থ জানা যায় এবং তার প্রতি অন্তরে বিশ্বাস স্থাপন করা যায়।
মুমিনগণ আল্লাহর গুণাবলিকে সৃষ্টির গুণাবলির সঙ্গে তুলনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকে। তারা পবিত্র কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী আল্লাহর গুণাবলির প্রতি ঈমান স্থাপন করে। যেমন:
‘কোনো কিছুই তার সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।’
(সুরা: আশ-শুরা, আয়াত: ১১)
এই আয়াতের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য খণ্ডন করা হয়েছে, যারা আল্লাহর গুণাবলিকে সৃষ্টির গুণাবলির সঙ্গে তুলনা করে। পাশাপাশি এটি আল্লাহর গুণাবলিতে অবিশ্বাসীদের প্রতিও এক চ্যালেঞ্জ, যারা আল্লাহর সিফাত অস্বীকার করে। এ আয়াতটি আসমা ওয়াস সিফাত বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্যতম মূলনীতি হয়ে উঠেছে।
বিশুদ্ধ হাদিসে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের উল্লেখ রয়েছে। তবে হাদিস বিশারদদের মতে, আল্লাহর গুণাবলির সংখ্যা ৯৯টিতে সীমাবদ্ধ নয়। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর কিছু গুণ মানুষের মধ্যে আংশিকভাবে প্রতিফলিত হতে দেখা যায়, যেমন: দয়াশীল হওয়া, ক্ষমা করা, সুবিচার করা। তবে আল্লাহর গুণাবলির পরিপূর্ণতা মানুষের কল্পনারও অতীত।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে:
‘কেউ তার সমকক্ষ নয়।’
(সুরা: ইখলাস, আয়াত: ৪)
মানুষের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে বলা হয়েছে:
‘মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।’
(সুরা: নিসা, আয়াত: ২৮)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।
0 Comments