ভারতে একটি জামে মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে
ভারতের উত্তরপ্রদেশের সামভালে মুঘল আমলের একটি জামে মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। হিন্দুত্ববাদী কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেছেন, মসজিদটি যে স্থানে অবস্থিত, সেখানে আগে একটি মন্দির ছিল। এই দাবির ভিত্তিতে তারা আদালতে পিটিশন করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই স্থানে জরিপ চালানোর নির্দেশ দেয়।
রোববার সকালে জরিপকারী একটি দল মসজিদে পৌঁছালে স্থানীয় মুসল্লিরা তাদের বাধা দেন এবং পুলিশ ও জরিপ দলের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি চালালে নাঈম, বিলাল ও নোমান নামে তিনজন মুসলিম নিহত হন।
পুলিশ জানায়, "অ্যাডভোকেট কমিশনার"-এর নেতৃত্বে জরিপ চালানোর সময় সেখানে প্রায় ১ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করে। সংঘর্ষে পুলিশের ৩০ সদস্য আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন সুপারিনটেনডেন্টের গানারও রয়েছেন।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, মুঘল শাসক বাবরের আমলে ১৫২৯ সালে মন্দির ভেঙে ওই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। সমালোচকদের মতে, মসজিদে জরিপের আদেশের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছে এবং ভারতের উপাসনা আইন ১৯৯১ লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ আইনে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের পর ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।
সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি নারীসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, মসজিদে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে এবং স্থানের বিভিন্ন অংশের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে এই জরিপের প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয় রাজনীতিবিদরা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দেশ্যে।
0 Comments